হযরত ইমাম মাহদী (আ.) বলেছেন, আমি মাহদী আমি যুগের নেতা, আমি সেই ব্যক্তি আমি পৃথিবীকে ন্যায় বিচারে পরিপূর্ণ করবো যেভাবে অন্যায় অবিচার ও অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আল্লাহর দুনিয়া কখোন আল্লাহর (হুজ্জাত) অকাট্য প্রমান থেকে খালি থাকবেনা এবং মানুষ ও বঞ্চিত থাকবেনা। এটা এমন একটা অমানত যা তোমার ভাইদের ছাড়া অন্য কাউকে বলনা । (কামাল আদ দীন, পৃ: ৪৪৫।)
বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ইমাম মাহদী(আ.) আরও বলেছেন, আমি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর, আমি শেষ যুগে এই তরবারী নিয়ে কিয়াম করব। (তরবারীর দিকে ইশারা করলেন) এবং পৃথিবীকে ন্যায় বিচারে পূর্ণ করব যেভাবে অন্যায় অবিচারে পূর্ণ হয়েছে।( বিহারুল আনওয়ার, ৫২ তম খণ্ড,পৃ. ৪১।)
তিনি বলেন: আমি অদৃশ্য থাকার সময় মানুষজন মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সূর্য থেকে যেভাবে লাভবান হয় আমার থেকে ঠিক সেভাবে লাভবান হবে। (কামাল আদ দীন, পৃ. ৪৮৫।)
এ পৃথিবী আল্লাহর অকাট্য দলিল থেকে কখনো খালি থাকবেনা আর সেই দলিল প্রকাশ্য ও হতে পারে আবার অপ্রকাশ্য ও হতে পারে।(কামাল আদ দীন, পৃ. ৫১১।)
যখন আল্লাহ আমাকে কথা বলার অনুমতি দিবেন তখন সত্য প্রকাশিত হবে এবং মিথ্য ধংস হবে। (বিহারুল আনওয়ার, ৫৩তম খণ্ড,পৃ.৪।)
আল্লামা তাবাতাবায়ী প্রায় ১০০ বছর পূর্বে তাবরীজের একটি ধর্মীয় পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময় ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন, তাফসীর ও দার্শনিক জ্ঞান অর্জনে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি এ বিষয়ে এতটাই জ্ঞান অর্জন করেছিলেন যে তাকে আল্লামা উপাধিতে ভূষিত করা হয়। আল্লামা এমন ব্যক্তিকেই বলা হয় যার জ্ঞানের গভীরতা অনেক বেশী। তিন খন্ড সূচনা ও বিশ খন্ডে বিভক্ত এই ''তাফসীর আল মিযান'' একটি অন্যতম সর্বজন স্বীকৃত কুরআনের তাফসীর হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি এটি আরবী ভাষায় লিখেছেন-যা ফার্সীসহ আরো কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আল্লামা তাবাতাবায়ী প্রথমে তাবরীজে ও পরবর্তীতে কোমে জ্ঞান অর্জনে মনোনিবেশ করেন। তার জীবনে এমন কোনো দিন ছিল না যেদিন তিনি জ্ঞান অন্বেষণে ব্যস্ত ছিলেন না। ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি লিখেছেন ''তাফসিরে আল মিযান'' কুরআন থেকে কুরআন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ একটি আয়াতের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে অন্যান্য আয়াত ও সুরার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি ইসলামী দর্শন; পাশ্চাত্যের দর্শন ও এদের তুলনামূলক আলোচনা নিয়ে লিখেছেন। ফ্রান্সের দার্শনিক হেনরি কারবিনের সাথে আল্লামা তাবাতাবায়ীর দার্শনিক বিতর্ক সত্যিই একটি পড়ার মতো বিষয়। ইরানের জনগণ এই ধর্মীয় পন্ডিতের জন্য গর্ববোধ করে। তার লেখাগুলো ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
আল্লামা তাবাতাবায়ী ইমাম মাহদী সম্পর্কিত আলোচনার ক্ষেত্রে প্রথমে ইমাম মাহদীর শানে অবতীর্ণ পবিত্র কোরআনের আয়াত বর্ণনা করেছেন। তারপর সেই আয়াতসমূহকে মাহদী(আ.) সম্পর্কিত রেওয়ায়েতের সাথে মিলিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।