IQNA

২৮শে সফর মহানবীর(সা.) ওফাত দিবস

17:53 - November 18, 2017
সংবাদ: 2604343
হিজরী সনের আটাশে সফর ইসলামের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। রেওয়ায়েতে আছে, এইদিন ইসলামের মহান নবী আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ রাসূল বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর ওফাত দিবস।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: মহানবী (সা.) এই পৃথিবীতে আমাদের জন্যে যে বার্তা নিয়ে এসেছেন, যেই আদর্শ নিয়ে এসেছেন তিনি সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যে, সেই আদর্শ আমরা কতোটা অনুসরণ করছি , কতোটা বাস্তবায়ন করছি আমাদের জীবনে-তা একবার পর্যালোচনা করে দেখা উচিত।

মনে রাখতে হবে রাসুলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একমাত্র উপায় হলো তাঁর প্রদর্শিত পথে চলা। জীবন সমস্যার সমাধানে তাঁর নির্দেশনাকে কাজে লাগানো। তাঁর চারিত্রিক ও নৈতিক আদর্শে আমাদের জীবনকে রাঙিয়ে তোলাই হবে তাঁর প্রতি ভালোবাসা নিবেদনের অন্যতম উপায়।

নবীজীর পৃথিবী থেকে চলে যাবার বিষয়টি সবার জন্যেই অসহনীয় কষ্টের ব্যাপার ছিল। কেননা নবীজী ছিলেন আল্লাহর মনোনীত সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, সর্বোত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার শ্রেষ্ঠতম উদাহরণ। তিনি খুব কম সময়ের মধ্যে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এবং ন্যায়নীতিময় একটি সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে সর্বস্তরের মানুষের জন্যে যথার্থ কল্যাণ বয়ে আনেন। পৃথিবীর সকল মানুষ তাঁর প্রতিষ্ঠিত সেই কল্যাণ-আদর্শ থেকে উপকৃত হয়।

হযরত আলী (আ.) এ সম্পর্কে বলেছেন: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর মাধ্যমে জনগণের জন্যে তাঁর সমূহ নেয়ামত বা কল্যাণ অবতীর্ণ করেছেন। দেখুন! জনগণ নবীজীর আনুগত্য করে আল্লাহর দ্বীনের সাথে কীভাবে নিজেদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে। তাঁরই দাওয়াতের ফলে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামত মানুষকে মর্যাদাবান করেছে। মানুষ প্রশান্তি আর কল্যাণের ঝর্ণাধারায় সিক্ত হয়েছে। সত্য দ্বীনের বরকতে মানুষ পুষ্ট হয়েছে। আল্লাহর নেয়ামতের মাঝে সিক্ত হয়ে মানুষ আনন্দিত জীবনযাপন করেছে। ইসলামী হুকুমতের ছায়ায় মানুষের সামাজিক জীবনে এসেছে দৃঢ় সম্মান ও মর্যাদা। মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে ইসলাম একটি স্থায়ী হুকুমতে পরিণত হয়েছে। রাসূলে খোদা (সা.) এর সম্মান ও মর্যাদা অনস্বীকার্য। কেবল তাঁর জীবদ্দশাতেই যে তিনি সম্মানিত ছিলেন তা নয়, বরং মৃত্যুর পরেও তিনি সমানভাবে মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী।

অতএব যাঁরা তাঁর অনুসারী তাঁরা অবশ্যই সফলকাম। যেমনটি পবিত্র কুরআনের সূরা আরাফে বলা হয়েছে, "অতএব যারা তাঁকে বিশ্বাস করে,তাঁকে মান্য করে,তাঁকে সাহায্য করে এবং তাঁর সাথে অবতীর্ণ আলোর অনুসরণ করে তারাই সফলকাম।" তাই আমাদের সবার উচিত হবে রাসূলে খোদার মনে কষ্ট লাগে এমন কোনো কাজ না করা।

মানুষের সকল কাজ যেন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যেই সম্পাদিত হয়, সে ব্যাপারে সমগ্র জাতিকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাঁর সকল কাজই হয়েছিল পার্থিব জগতের কল্যাণ এবং পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে। যেই মানব মুক্তির জন্যে রাসূলের সকল কর্মতৎপরতা ছিল,সেই মহান ব্যক্তিত্বের ওফাতের পর আমাদের সবার উচিত তাঁর ওপর সালাম এবং দরূদ প্রেরণ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে তোলা।

কেননা সূরা আহযাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীজীর ওপরে দরুদ প্রেরণ করেন। অতএব হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পাঠাও এবং সশ্রদ্ধচিত্তে সালাম জানাও।
captcha