বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আজ ইরানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে দাবি করেছেন, সৌদি তেল স্থাপনায় ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন হামলার পেছনে তেহরানের মদদ রয়েছে। ইয়েমেনি যোদ্ধাদের পাল্টা হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞদের স্বীকারোক্তিকে উপেক্ষা করে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই পম্পেও দাবি করেছেন, বিশ্বে বড় জ্বালানি সরবরাহকারী সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ইরান নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়তো এটা ভুলে গেছেন সৌদি আরবের অনেক গভীরে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন হামলার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত মাসের মাঝামাঝিতেও আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা ১০টি ড্রোনের সাহায্যে সৌদি আরবের অনেক গভীরে তেল স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। ওই জায়গাটি ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। এরপর গতকাল তারা ইয়েমেন থেকে ১২০০ কিলোমিটার দূরে সৌদি আরবের ‘বাকিক’ ও ‘খারিস’ তেল শোধনাগারে ১০টি পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোনের সাহায্যে ফের এ হামলা চালিয়েছে। সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান বলেছেন, হামলার কারণে দিনে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল কমেছে, যা সৌদির মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক। এমনকি সৌদি আরবের তেল উৎপাদন ও রপ্তানির ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
এ ঘটনায় শুধু সৌদি আরব নয় তার মিত্র আমেরিকাও হতভম্ব হয়ে গেছে। আমেরিকা ড্রোন হামলা মোকাবেলায় ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এ হামলার পেছনে ইরানের হাত থাকার অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, "এটি সৌদি আরবের গভীরে আমাদের বাহিনীর সবচেয়ে বড় হামলা।" তিনি আরো বলেন, "সৌদি আরবের ভেতরে আমাদের বন্ধুদের সহযোগিতায় এ হামলা চালানো হয়েছে।"
বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে এবং হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজকে ইরানের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ হামলার ব্যাপারে প্রকাশ্যে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাতে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পম্পেও এমন সময় ইরানকে অভিযুক্ত করেছেন যখন তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণই দিতে পারেননি। পম্পেওর ইরান বিরোধী বক্তব্যে বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। মার্কিন ডেমোক্রেট দলের নেতা মারফি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর এ ধরণের বক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন উল্লেখ করেছেন। iqna