বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: শিয়া মাযহাবের একাদশ ইমাম হযরত হাসান আসকারী (আ.) তার মহান পিতা। মাতা হযরত নারজিস খাতুন। নারজিস খাতুনের পিতা হলেন রোমের যুবরাজ ,আর মাতা আশ্ শামউন সাফার বংশধর হযরত ঈসা (আ.)- এর ওয়াসি এবং নবীগণের বন্ধু হিসাবে পরিচিত। নারজিস খাতুন স্বপ্নের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী যুদ্ধের ময়দানে যান এবং সেখানে অন্যান্য মুসলমানদের সাথে বন্দি হন। ইমাম হাদী আন্ নাকী (আ.) একজনকে প্রেরণ করেন এবং সে নারজিস খাতুনকে কিনে সামেররায় ইমামের বাড়িতে নিয়ে আসে।
ইমাম যামানার প্রসিদ্ধ উপাধিসমূহ হচ্ছে: মাহদী,কায়েম ,মুনতাযার ,বাকিয়াতুল্লাহ ,হুজ্জাত ,খালাফে সালেহ ,মানসুর ,সাহেবুল আমর ,সাহেবুয্ যামান এবং ওলী আসর আর সর্বাধিক প্রসিদ্ধ হল মাহদী। প্রতিটি উপাধিই মহান ইমাম সম্পর্কে এক বিশেষ বাণীর বার্তাবাহক।
রাসূল (সা.) ও তার পবিত্র আহলে বাইত (আ.)-এর বাণীতে ইমাম মাহদী (আ.)-এর আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে তার কিছু এখানে তুলে ধরছি:
তার চেহারা যুবক এবং গৌরবর্ণেও ,কপাল প্রশস্ত ও উজ্জ্বল ,ভ্রু চাঁদের মত ,চোখের রং কালো ও টানা টানা ,টানা নাক ও সুন্দর ,দাঁতগুলো চকচকে। ইমামের ডান চোয়ালে একটি কালো তিল আছে এবং কাঁধের মাঝে নবীগণের মত চিহ্ন আছে। তার গঠন সুঠাম ও আকর্ষণীয়।
পবিত্র ইমামদের পক্ষ থেকে তার সম্পর্কে যে সকল বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে তার কিছু এখানে তুলে ধরা হল:
ইমাম মাহদী (আ.) তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন ,সংযমি এবং সাধারণ ,ধৈর্যশীল এবং দয়ালু ,সৎকর্মশীল ও ন্যায়পরায়ণ । তিনি সকল জ্ঞান- বিজ্ঞানের ধনভাণ্ডার। তার সম্পূর্ণ অস্তিত্ব জুড়ে পবিত্রতা এবং বরকতের ঝর্ণাধারা। তিনি জিহাদি ও সংগ্রামী ,বিশ্বজনীন নেতা ,মহান বিপ্লবী এবং তিনি প্রতিশ্রুত শেষ সংস্কারক ও মুক্তিদাতা। সেই জ্যোতির্ময় অস্তিত্ব রাসূলের বংশধর ,হযরত ফাতিমাতুয্ যাহরার সন্তান এবং সাইয়্যেদুশ্ শুহাদা হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-এর নবম বংশধর। তিনি মক্কা শরিফে আবির্ভূত হবেন এবং তার হাতে থাকবে রাসূল (সা.)-এর ঝাণ্ডা। তিনি সংগ্রামের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে রক্ষা করবেন ও আল্লাহর শরিয়তকে সারাবিশ্বে প্রচলিত করবেন। এ পৃথিবী অন্যায় অত্যাচারে পরিপূর্ণ হওয়ার পর তিনি তা ন্যায়-নীতিতে পরিপূর্ণ করবেন।
ইমাম মাহদী (আ.)-এর জীবনী তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত:
১ । গুপ্ত অবস্থা : জন্মের পর থেকে ইমাম হাসান আসকারী (আ.) – এর শাহাদত পর্যন্ত তিনি গুপ্ত অবস্থায় জীবন-যাপন করেন।
২ । অদৃশ্যকাল : ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর শাহাদতের পর থেকে শুরু হয়েছে এবং আল্লাহর নির্দেশে আবির্ভাব হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তা চলতে থাকবে।
৩ । আসরে যহুর (আবির্ভাবের সময়): অদৃশ্যকাল শেষ হওয়ার পর মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আবির্ভূত হবেন এবং পৃথিবীকে সুখ-শান্তি ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ করবেন। কেউই তার আবির্ভাবের সময়কে জানেন না । ইমাম মাহদী (আ.) নিজেই বলেছেন ,‘ যারা তার আবির্ভাবের সময়কে নির্ধারণ করবে তারা মিথ্যাবাদী।