বার্তা সংস্থা ইকনা: প্রতীক্ষিত ইমামকে (আ.) না চিনে প্রতীক্ষার পথকে অতিক্রম করা অসম্ভব। প্রতিশ্রুত ইমামকে চেনার মাধ্যমেই প্রতীক্ষার পথে টিকে থাকা সম্ভব। সুতরাং ইমাম (আ.)-এর নাম ও বংশ পরিচয় জানার পাশাপাশি তার মর্যাদা ,মহিমা ,অবস্থান ও পদমর্যাদা সম্পর্কেও বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে।
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর খাদেম আবু নাসর ইমাম মাহদী (আ.)- এর অন্তর্ধানের পূর্বে ইমামের কাছে আসলে ইমাম (আ.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: তুমি আমাকে চেন? সে বলল: হ্যাঁ ,আপনি আমার নেতার সন্তান এবং আমার নেতা। ইমাম বললেন: এমন পরিচয় সম্পর্কে আমি তোমাকে প্রশ্ন করি নি। আবু নাসর বলল: তাহলে আপনি কেমন পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন ,দয়া করে নিজেই বলুন।
ইমাম (আ.) বললেন: আমি রাসূল (সা.)-এর সর্বশেষ প্রতিনিধি এবং আল্লাহ আমার মাধ্যমেই আমার বংশ ও আমাদের অনুসারীদের বালা-মুসিবত দূর করে থাকেন।
যদি প্রতীক্ষাকারী ইমামের সঠিক পরিচিতি অর্জন করতে পারে তাহলে সে এখন থেকেই নিজেকে ইমাম (আ.)-এর পক্ষে অনুভব করবে অর্থাৎ মনে করবে যে ,সে ইমাম (আ.)-এর তাবুতে তার পাশেই অবস্থান করছে। সুতরাং কখনোই সে ইমাম (আ.)-এর দলকে শক্তিশালী করার জন্য সামান্যতম সময়কেও হেলায় কাটাবে না।
ইমাম বাকের (আ.) বলেছেন: من مات و هو عارف لامامه لم یضره تقدم هذا الامر او تأخر و من مات و هو عارف لامامه کان کمن هو مع الفائم فی فسطاطه
যে ইমাম (আ.)-কে সঠিকভাবে চিনে মৃত্যুবরণ করবে ইমামের আবির্ভাব দেরীতেই হোক আর নিকটেই হোক তার জন্য কোন ক্ষতির কারণ নয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইমাম (আ.)-কে সঠিকভাবে চিনে মৃত্যুবরণ করবে সে সেই ব্যক্তির ন্যায় যে, ইমাম (আ.)-এর তাবুতে তার পাশেই অবস্থান করছে।
এই পরিচিতি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে ইমামগণ (আ.) বলেছেন ,তা অর্জন করার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন: ইমাম মাহদী (আ.)-এর দীর্ঘ অন্তর্ধানে বিপথগামীরা সন্দেহে পড়বে। ইমামের ছাত্র যুরারাহ বলল: ঐ পরিস্থিতির শিকার হলে কি করতে হবে? ইমাম (আ.) বললেন: এই দোয়া ’ টি পাঠ করবে।
اَللّهُمَّ عَرِّفْني نَفْسَکَ فَاِنَّکَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْني نَفْسَکَ لَمْ اَعْرِفْ رَسُولَکَ اَللّهُمَّ عَرِّفْني رَسُولَکَ فَاِنَّکَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْني رَسُولَکَ لَمْ اَعْرِفْ حُجَّتَکَ اَللّهُمَّ عَرِّفْني حُجَّتَکَ فَاِنَّکَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْني حُجَّتَکَ ضَلَلْتُ عَنْ ديني
উপরিউক্ত আলোচনায় সৃষ্টিজগতে ইমামের (আ.) অবস্থানের পরিচয় সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। তিনি আল্লাহর হুজ্জাত, রাসূলের (সা.) প্রকৃত প্রতিনিধি এবং সর্বসাধারণের নেতা তথা ইমাম। তার আনুগত্য সবার জন্য ওয়াজিব, কেননা তার আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যেরই অনুরূপ।
ইমাম (আ.) পরিচিতির অপর দিকটি হল তার সিরাত ও বৈশিষ্ট্যকে চেনা। এই পরিচিতি প্রতীক্ষাকারীর কার্যগত জীবনের প্রতিটি দিকে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। ইমাম তথা আল্লাহর হুজ্জাতের জীবনের প্রতিটি দিকের সাথে মানুষের পরিচয় যত বেশী ঘনিষ্ঠ ও গভীর হবে তার প্রভাবও মানুষের জীবনের প্রতিটি দিকে অধিক হবে।