IQNA

সহীহ বুখারীর রাবীদের মধ্যে মুনাফিক খারেজী ও নাসিবী বিদ্যমান :

1:26 - January 09, 2024
সংবাদ: 3474910
ইকনা: সহীহ বুখারীতে ইমরান ইবনে হাত্তান খারিজী ও হারীয ইবনে উসমান নাসিবীর মতো হযরত আলী (আ) ও আহলুল বাইত ( আ ) বিদ্বেষী ব্যক্তিদের থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী । অথচ মহানবীর ( সা ) পবিত্র আহলুল বাইতের (আ) বারো মাসূম ইমামের ষষ্ঠ মাসূম ইমাম  জাফর সাদিক্ব ( আ ) থেকে একটা হাদীসও তিনি ( ইমাম বুখারী ) বর্ণনা করেন নি। আল্লামা আহমাদ যাহাবী মীযানুল ই'তিদাল গ্রন্থে ( ২য় খণ্ড পৃ : ১৪৩ ) ইমাম জাফার সাদিক্ব (আ) সম্পর্কে লিখেছেন: জাফার ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনুল হুসাইন আল - হাশিমী, আবূ আব্দিল্লাহ স্বনামধন্য একজন ইমাম , পূণ্যবান ( বার্র ) , সত্যবাদী ( সাদিক্ব ) এবং বড় মর্তবা , শান ও মর্যাদার অধিকারী। ইমাম বুখারী হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে তাঁর মাধ্যমে সনদ পেশ করেন নি ( অর্থাৎ তাঁর থেকে একটি হাদীসও তিনি রেওয়ায়ত করেন নি )


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 

সহীহ বুখারীতে ইমরান ইবনে হাত্তান খারিজী ও হারীয ইবনে উসমান নাসিবীর মতো হযরত আলী (আ) ও আহলুল বাইত ( আ ) বিদ্বেষী ব্যক্তিদের থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী । অথচ মহানবীর ( সা ) পবিত্র আহলুল বাইতের (আ) বারো মাসূম ইমামের ষষ্ঠ মাসূম ইমাম  জাফর সাদিক্ব ( আ ) থেকে একটা হাদীসও তিনি ( ইমাম বুখারী ) বর্ণনা করেন নি। আল্লামা আহমাদ যাহাবী মীযানুল ই'তিদাল গ্রন্থে ( ২য় খণ্ড পৃ : ১৪৩ ) ইমাম জাফার সাদিক্ব (আ) সম্পর্কে লিখেছেন: জাফার ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনুল হুসাইন আল - হাশিমী, আবূ আব্দিল্লাহ স্বনামধন্য একজন ইমাম , পূণ্যবান ( বার্র ) , সত্যবাদী ( সাদিক্ব ) এবং বড় মর্তবা , শান ও মর্যাদার অধিকারী। ইমাম বুখারী হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে তাঁর মাধ্যমে সনদ পেশ করেন নি ( অর্থাৎ তাঁর থেকে একটি হাদীসও তিনি রেওয়ায়ত করেন নি )


جَعْفَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ الْهَاشِمِيِّ، أَبُوْ عَبْدِ اللّٰهِ أَحَدُ الْأَئِمَّةِ الْأَعْلَامِ، بَرٌّ صَادِقٌ كَبِيْرُ الشَّأْنِ، لَمْ يَحْتَجَّ بِهِ الْبُخَارِيُّ.

অথচ মহানবীর (সা) সহীহ মুতাওয়াতির সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ও প্রতিষ্ঠিত সন্দেহাতীত হাদীসে সাকালাইন মোতাবেক পবিত্র কুরআন ও তাঁর পবিত্র মাসূম আহলুল বাইতকে ( আ ) উম্মতের জন্য আমানত রেখে গেছেন যাদের আঁকড়ে ধরলে উম্মত কখনো বিচ্যুত হবে না ।
মহানবী ( সা) থেকে সহীহ ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কাছে প্রতিষ্ঠিত হাদীস মোতাবেক আলীকে (আ) যারা ঘৃণা করে তারাই মুনাফিক ।
হযরত আলী (আ) বলেন : যিনি বীজ বা শস্য দানা চিরে অর্থাৎ অঙ্কুরিত করে উদ্ভিদ তৈরি এবং (মানব )প্রাণ সৃষ্টি করেছেন তাঁর শপথ ! নিশ্চয়ই আমার প্রতি উম্মী নবীর ( সা ) প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতি ( আহদ ) হচ্ছে ( এই যে ) : মুমিন ব্যতীত আর কেউ আমাকে ভালোবাসে না এবং মুনাফিক ব্যতীত আর কেউ আমাকে ঘৃণা করে না।


عن علي قال: و َالَّذِيْ فَلَقَ الْحَبَّ و بَرَأَ النَّسَمَةَ إِنَّهُ لَعَهْدُ النَّبِيُّ إِلَيَّ : لَا یُحِبُّنِيْ إِلَّا مُؤْمِنٌ وَ لَا یُبْغِصُنِيْ إِلَّا مُنَافِقٌ .

পবিত্র কুরআনের বক্তব্য অনুযায়ী মুনাফিকরা মাল'ঊন ( অভিশপ্ত ) এবং জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরে তারা থাকবে । ( দ্র: সহীহ মুসলিম এবং নাসায়ীর আল - খাসায়েস , পৃ : ৮৬ , হাদীস নং ১০০ ) এ হাদীসটির ইসনাদ সহীহ । )

إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَنْ تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا  


নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে ( থাকবে ) এবং আপনি তাদের জন্য কখনোই কোনো সাহায্য কারীকে পাবেন না । ( সূরা - ই নিসা [৪] : ১৪৫ )
   পবিত্র কুরআনে মুনাফিকদেরকে মহান আল্লাহ লা'নত দিয়েছেন ও অভিশপ্ত করেছেন। তাই তারা মাল'ঊন ( অভিশপ্ত ) :


وَعَدَ اللّهُ الْمُنافِقینَ وَ الْمُنافِقاتِ وَ الْکُفّارَ نارَ جَهَنَّمَ خالِدینَ فیها هِیَ حَسْبُهُمْ وَ لَعَنَهُمُ اللّهُ وَ لَهُمْ عَذابٌ مُقیمٌ»(13)


মহান আল্লাহ মুনাফিক নর নারীদেরকে এবং কাফিরদেরকে জাহান্নামের ওয়াদা (প্রতিশ্রুতি) দিয়েছেন যেখানে তারা চিরকাল থাকবে ; সেটাই ( জাহান্নাম বাসস্থান হিসেবে ) তাদের জন্য যথেষ্ট এবং মহান আল্লাহ তাদের অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব ( শাস্তি )  ( সূরা - ই 
তওবা: ৬৮ ) ।
অথচ ইমাম বুখারী আলী বিদ্বেষী , আলীকে ঘৃণাকারী ও আলীর প্রতি শত্রুতা প্রদর্শনকারী খারিজী ও নাসিবী ( উমাইয়াপন্থী ) মুনাফিক মাল'ঊন রাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন এ যুক্তি দেখিয়ে যে এ সব খারিজী নাসিবী নাকি সিকাহ্ ( ثِقَةٌ বিশ্বস্ত নির্ভরযোগ্য ) ও মুত্তাকী - পরহেযগার যদিও তারা আলীর প্রতি বিদ্বেষ , ঘৃণা ও শত্রুতা প্রদর্শনের কারণে বিদাতপন্থী। ইমাম বুখারীর কাছে প্রশ্ন : কিভাবে আপনি বিদাতপন্থী মাল'ঊন মুনাফিকদেরকে মুত্তাকী - পরহেযগার ও সিক্বাহ ( ثقة বিশ্বস্ত নির্ভরযোগ্য) বলতে পারলেন ? 
ইতিমধ্যে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে আলী বিদ্বেষী ও আলীর প্রতি শত্রুতা প্রদর্শনকারীরা মাল'ঊন (مَلْعُوْنٌ অভিশপ্ত ) মুনাফিক যারা জাহান্নামের সর্ব নিম্নস্তরে থাকবে অর্থাৎ নরকের কীট। আর নরকের কীট ও নরকের সর্বনিম্ন স্তরে আযাব ভোগকারী বিদ'আতপন্থী মুনাফিক কখনো মুত্তাকী পরহেযগার ও সিক্বাহ হয় না এবং তা সর্বৈব অসম্ভব । কারণ বিদ'আত ঘৃণ্য জঘন্য পাপ এবং তাকওয়া পরিপন্থী এবং বি'আতপন্থী কখনোই মুত্তাকী - পরহেযগার হতে পারে না । আর এ থেকে প্রমাণিত হয় যে ইমাম বুখারী হচ্ছেন উমাইয়াপন্থী , খারিজীপন্থী ও  নাসিবীপন্থী। কেন এ সব মাল'ঊন ( অভিশপ্ত ) মুনাফিক খারিজী নাসিবীকে ইমাম বুখারীর এত পছন্দ ? কেন এ সব নরকের কীট ইমাম বুখারীর প্রিয়পাত্র ( মাহবূব) ? 
স্বয়ং ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম নিজেরাই ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন । ইবনে মাসউদ (রা) বলেন : এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহর (সা)কা ছে এসে জিজ্ঞেস করল: ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার ধারণা ও অভিমত কী যে এক সম্প্রদায়কে ( কওম )  ভালোবেসেছিল এবং সে তাদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না ( অর্থাৎ সে তাদের সমসাময়িক ছিল না এবং ঐ সম্প্রদায়ের পরে সে জন্মগ্রহণ করেছিল )? মহানবী ( সা ) বললেন : মানুষ যাকে ভালোবেসেছে তার সাথেই সে আছে বা থাকবে ।


اَلْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ

( অর্থাৎ যে ব্যক্তি নমরূদকে ভালোবাসবে ও পছন্দ করবে সে পরকালে নমরূদের সাথেই থাকবে ; যে ব্যক্তি আবূ জাহলকে ভালোবাসবে পরকালে সে আবূ জাহলের সাথেই একজায়গায় থাকবে । যে ব্যক্তি বেহেশতের যুবকদের নেতা ইমাম হুসাইনকে ( আ ) ভালোবাসবে সে পরকালে ইমাম হুসাইনের সাথেই থাকবে এক স্থানে। যে ব্যক্তি পাপাত্মা ইয়াযীদকে ভালোবাসবে সে পরকালে ইয়াযীদের সাথেই থাকবে !! )
তাব্রানী ভালো ইসনাদ ( পূর্ণাঙ্গ সনদ ) সহকারে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন : " কোন ব্যক্তি যে কওমকে ( দল , সম্প্রদায় ও গোষ্ঠী) ভালোবাসে কেবল তাদের সাথেই ( মৃত্যুর পর পরকালে ) সে পুনরুত্থিত হবে । " আর আহমাদ ইবনে হাম্বালও এ হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন ।


وَ لَا یُحِبُّ رَجُلٌ قَوْمَاً إِلَّا حُشِرَ مَعَهُمْ .

অতএব আলী বিদ্বেষী মুনাফিক মাল'ঊন (অভিশপ্ত ) খারেজী ও নাসিবীদের মুহববত ও পছন্দ করলে তার পরিণতি কী হবে ?!!
ইমাম বুখারী ছিলেন ইরানী বংশোদ্ভূত অর্থাৎ মাজুসী অগ্নিউপাসক ইরানীর বংশধর । তাঁর  প্রপিতামহের নাম বার্দেযবাহ্ । ইমাম বুখারীর নাম : আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইব্রাহীম ইবনে বার্দেযবাহ্ আল - বুখারী ( মৃত্যু: ২৫৬ হি. )। সম্ভবত: তার প্রপিতামহ ( বার্দেযবাহ্ ) অথবা তার পিতামহ ( ইব্রাহীম) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । আর ইমাম আবু হানিফা যে ইরানী ছিলেন তা সর্বজন বিদিত। এমনকি ইমাম মুসলিমও ইরানী ছিলেন। তাঁর নাম আবুল হুসাইন মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ ইবনে মুসলিম ইবনে ওয়ার্দ্ ইবনে কূশাধ আল - ক্বুশাইরী আন নাইসাবূরী ( নিশাপুরী ) ( ২০৬ - ২৬১হি ) । অতএব ইমাম বুখারী আরব ছিলেন না।

ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান,
captcha